অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করতে চাইলে, কিছু দক্ষতা অর্জন করতেই হবে। বর্তমানে কর্মক্ষেত্র অনলাইনভিত্তিক হয়ে উঠছে। সব কাজ অনলাইনে করানো যায়। ফ্রিল্যান্সিং উপায়ে করানো যায়।
Table of Contents
এজন্যই অনলাইনভিত্তিক কাজের চাহিদা বাড়ছে। বাড়ছে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা। প্রচুর কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। পার্ট টাইমার, ফুল টাইমার ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যাও প্রচুর। দিন দিন এই সংখ্যা যে বাড়ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার বিশ্বস্ত এবং জনপ্রিয় উপায় নিয়ে আজকের পোস্টে আলোচনা করেছি। যারা নতুন, যারা অনলাইনে কাজ করে এক ডলারও ইনকাম করতে পারেন নাই। তাদের জন্য এই পোস্ট টি বেশ সহায়ক হবে। তাই, মনোযোগ দিয়ে পোস্ট পড়ুন।
অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম
অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করা যেমন সহজ তেমনই কঠিন। নতুনদের জন্য অনেক কঠিন। একবার ইনকাম করা শুরু করতে পারলে সহজ। এজন্যই বলি, অনলাইনভিত্তিক কাজ করা সহজ বুঝা কঠিন।

অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম যেমন; একটি ওয়েসবাইটের এসইও করে গুগলের প্রথম পেজে নিয়ে আসা। এটা হলো অনলাইনভিত্তিক কাজ। এই কাজটি করে দেয়ার ফলে ওয়েবসাইটের মালিক আমাকে ৩০০ ডলার থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত পেমেন্ট করবে। এটাই হলো অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম।
অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার স্কিল:
অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনার কিছু দক্ষতা থাকতেই হবে। প্রাথমিক দক্ষতা, ভাষাগত বা যোগাযোগ দক্ষতা এবং টেকনিক্যাল দক্ষতা থাকতে হবে।
প্রাথমিক দক্ষতা; কম্পিউটারের প্রাথমিক জ্ঞান যেমন; মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট, নেটওর্য়াকিং, গুগল সার্চ, ইমেইল সংক্রান্ত যাবতীত কাজ। এবং ইমেইল মার্কেটিংও জানতে হবে।
ভাষাগত দক্ষতা; বাংলা ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। অনলাইনে বেশিরভাগ কাজ আসে বাইরের দেশ থেকে। তাদের মাতৃভাষা ইংরেজি। তাদের সাথে যোগাযোগ করতে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস থাকা ভালো। এছাড়াও, জার্মানি, ফ্রেস ভাষায় আয়ত্ব করতে পারলে বাড়তি সুবিধা পাবেন।
টেকনিক্যাল দক্ষতা; মূলতা সফট স্কিল যেমন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলাপমেন্ট, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি বিষয়গুলোতে যতো দক্ষতা অর্জন করবেন ততো পেশাগত দিক থেকে এগিয়ে থাকবেন।
১. অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকামের উপায় ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি মার্কেটপ্লেস। এখানে বায়ার এবং ফ্রিল্যান্সার উভয়কে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। একটি জিমেইল আইডি এবং একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায়। বায়ারকে কাজ করানোর জন্য মার্কেটপ্লেসকে কমিশন দিতে হয়। যতো ডলারের কাজ করাবে তার ১৫%-২০% দিতে হয়ে মার্কেটপ্লেসকে। আবার ফ্রিল্যান্সার যতো ডলারের কাজ করবে তার থেকে সমপরিমাণ শতাংশ হিসেবে কেটে রাখবে।
Platform Freelancing Marketplace
কয়েকটি মার্কেটপ্লেস হলো Fiverr.com, Upwork.com, Freelancer.com, peopleperhour.com and 99design.com.
কাজের ধরণ; অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করতে চাইলে কাজের ধরণ সর্ম্পকে ভালো ধারণা থাকতে হবে। কয়েকটি জনপ্রিয় এবং অধিক ইনকাম জেনারেটিং কাজের নমুনা এখানে দিলাম।
- ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডিজাইন;
- ওয়েব ডিজাইন
- ওয়েব ডেভেলাপমেন্ট
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- আর্টিকেল রাইটিং
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন
কতো টাকা আয় করা যায়;
কাজের ধরণ, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে মাসে ২০ ডলার থেকে ২০০০ ডলার ইনকাম করা সম্ভব।
আরো পড়ুন- গুলল পে কী? গুগল পে এর সুবিধা ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত তথ্য
- বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম! সুবিধা-অসুবিধা
- শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে চাকুরি,মাসিক বেতন পাবনে ৭১,৫০০ টাকা
- খাদ্য অধিদপ্তরের ২৫ ক্যাটাগরির ১৭৯১টি শূন্যপদে বিশাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
- টেকনো মোবাইলের দাম ২০২৫
২. ব্লগিং করে টাকা ইনকাম
আপনি অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করতে চাইলে, ব্লগিং শুরু করতে পারেন। ব্লগিং করে মাসে মাসে হ্যান্ডসাম মানি ইনকাম করা যায়। অনেকে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করছে নিয়মিত। তাদের পেশা ব্লগিং। আবার, কেউ কেউ মাসে লক্ষাধিক টাকা ইনকাম করছে।
আরো পড়ুন: ব্লগিং করে আয় করার ১০টি ট্রিকস। ব্লগ থেকে কি ধরনের আয় হয়।
আপনি শুরুতে এতো টাকা পাবেন না। কারণ, ব্লগিংয়ে ভালো করতে হলে হয় টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। না হলে অনেক কিছু জানতে হবে। ভালো করে জেনে শুরু করুন। আসতে আসতে ইনকাম আসবে। আসতে আসতে এডভান্স লেভের কাজ শিখে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারবেন।
কোন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবেন?
প্রথমে একটি প্ল্যাটফর্ম লাগবে। যেখানে আপনি লিখালিখি করবেন। যেমন; গুগলের ব্লগার ডট কম। ওয়ার্ডপ্রেস। ওয়েবলি ইত্যাদি। আমার সাজেশন হলো সম্পন্ন গুগলের ব্লগার ব্যবহার করা। ব্লগার হোস্টিং ফ্রি দিবে। সাব-ডোমেইনও ফ্রি দিবে। তবে, একটি ডোমেইন কিনবেন। ভালো থিম কিনবেন। অথবা, প্রফেশনালি ডিজাইন করবেন।
এবার, আপনার পছন্দের বিষয়ে লিখবেন। তবে, ইনকাম করতে চাইলে, পছন্দের বিষয় হলেই হবে না। সেই সাথে মানুষ কোন বিষয়ে সার্চ করে সেটাই মাথায় রেখে ব্লগ লিখতে হবে। তাহলে, সহজে ব্লগে ভিজিটর আসবে। এবং গুগল এডসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। গুগল এডসেন্স পেলে গুগলের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করতে পারবেন।
বাংলায় ব্লগিং আসলে বেশি ইনকাম হয় না। আমাদের একটি সাইট থেকে বেশি টাকা ইনকাম করতে পারছিনা। কয়েকটি সাইট মিলিয়ে মাসে একজন গতানুগতিক একজন চাকুরিজীবীর থেকে কম নয়।
৩. ফেসবুকে কনটেন্ট তৈরি করে অনলাইন ইনকাম
অনলাইনে কাজ করে ইনকাম করতে চান? তাহলে, ফেসবুকে কনটেন্ট তৈরি করুন। বর্তমানে সব প্রফাইল থেকে ইনকাম করার সুযোগ মেটা দিয়েছে। ব্যক্তিগত প্রফাইলকে প্রফেশনাল মুডে নিয়ে আসুন। এরজন্য কিছু সেটিং করতে হবে। সেটিং করুন। তারপর, কিছু কন্ডিশন পূরণ করে ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
বর্তমানে ফেসবুক থেকে ইমেজ, টেক্সট, শর্টস ভিডিও, লং ভিডিও, স্টোরিসহ সব ধরণের কনটেন্ট থেকে ইনকাম করার সুযোগ আছে। কয়েকটি ইনকাম টুলস হলো স্টারস, পার্টনাশিপ এডস, কনটেন্ট মনিটাইজেশন, সাবস্ক্রিপশন । উল্লেখ্য যে, ফেসবুকের রিলস, বোনাসের অপশন আলাদাভাবে নেই। এই দুটি আসলে কনটেন্ট মনিটাইজেশনের সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
৪. ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম
ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনলাইন করতে পারেন। এখন সময় স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ার। ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করার অনেক উপায় আছে। ডিজিটাল মার্কেটিং করে মাসে কতো টাকা ইনকাম করতে পারবেন এটার কোনো সীমারেক্ষা নেই। যেমন কাজ করতে পারবেন তেমন ইনকাম করতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং কি: ডিজিটাল মার্কেটিং হলো ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে পণ্যের প্রচার করে প্রসার করা যার ফলে পণ্য বা সার্ভিসের সেল বেশি হয়। বিক্রেতার লাভ বেশি হয়। ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। একটি উদাহরণ দিই; আমার ব্লগ পোস্টে কোনো পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দেখে থাকলে সেটা ডিজিটাল মার্কেটিং এর ফলে দেখতে পারছেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং করে উৎপাদনকারী যেমন লাভবান হোন তেমনই যে পরিবেশকরা লাভবান। এখন আপনি কি কেন ডিজিটাল মার্কেটিং করবেন? এবং কিভাবে ইনকাম করবেন। আপনার তো পণ্য বা সেবা নাই। তাহলে, আপনাকে কোনো পণ্য উৎপাদনকারীর পক্ষে তার পণ্যের বা সেবার প্রচার করতে হবে। তার প্রণ্যের প্রচার করে সেল বৃদ্ধি করবেন।
এজন্য সে আপনাকে পেমেন্ট করবে। এই কাজ করানোর জন্য স্যোশাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে প্রচার গিগ পাবলিশ করা আছে। জব অফার করা আছে। চাইলে দেখতে পারেন।
৫. ড্রপশিপিং করে ইনকাম
অনলাইনে কাজ করে ইনকাম করতে চাইলে ড্রপশিপিং করতে পারেন। ড্রপশিপিং একটি ভালো আইডিয়া। এখানে আপনাকে অনলাইনভিত্তিক কাজের জ্ঞান থাকলে কাজ করতে পারবেন। পণ্য স্টোর করার জন্য দোকান নিতে হবে না্ ইনভেস্ট করতে হবে না। নির্দিষ্ট পণ্যের মার্কেটিং করুন।
সেল হলে কোম্পানির এড্রেসে কাস্টমারের বিস্তারিত দিয়ে দিন। কোম্পানির পেমেন্ট গেটওয়ে জানিয়ে দিন। কোম্পানি পেমেন্ট পেয়ে যাবে। কাস্টমার পণ্য আর আপনি মাঝখানে থেকে কিছু লাভ করে নিতে পারলেন। এভাবে ব্যপকভাবে ড্রপ শিপিং এর কাজ করে ইনকাম করা যায়।
৬. আর্টিকেল লিখে ইনকাম
আপনার যদি লিখার হাত ভালো থাকে তাহলে, লিখালিখি করে ইনকাম করতে পারেন। সেটাও কম নয়। বড় অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবন। আর্টিকেল লিখে ইনকামের জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট সাইটে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে রাখুন। এসব সাইটে হাই-প্রাইজে আর্টিকেল লিখানো হয়।
বাংলায় আর্টিকেল লিখতে চাইলে আমাদের সাথে যোগযোগ করুন। আমারাও লিখাই। অনেকগুলো বাংলা ব্লগিং সাইট আছে। এসব সাইটে ব্লগিং করার জন্য আমরা বাংলায় আর্টিকেল লিখায়। প্রতি ১০০০ শব্দের জন্য আমরা ৫০ টাকা প্রদান করি। যতো টাকা হবে মাস শেষে পেয়ে যাবেন। বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করি।
৭. অনলাইন টিউশনি করে ইনকাম
বর্তমানে সবাই অনলাইনে কোনো না কোনো অকাজে সময় নষ্ট করে। আপনিও নষ্ট করছেন। সময় নষ্ট না করে কাজ লাগান। আপনারা যারা একাডেমিক পড়ালেখায় ভালো তারা বাড়ি বাড়ি টিউশনি করার থেকে অনলাইনে একটি ব্যাচ পড়ান।
একবার জনপ্রিয় হয়ে গেলে আপনার একাধিক পড়ায়ে শেষ করতে পারবেন। অনলাইনে টিউশনি করানোর জন্য গুগল মিট, জুম অ্যাপসহ আরো অনেক অ্যাপস আছে। এই অ্যাপের সাহায্যে ছাত্রছাত্রীদের সাথে যুক্ত হয়ে লাইভ ক্লাস করাতে পারবেন।
এবার, এই অপশনটি আপনি যে কাজে ভালো আপনি সেই কাজটিই ভালো করুন। তারপর, সেটা শিখানোর জন্য অনলাইনে কোর্স চালু করুন। দেখবেন, কোর্স করিয়ে মানুষকে যেমন উপকার করতে পারবেন তেমনই আপনার ইনকামও হবে।
উপসংহার
অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার অনেক উপায় আছে। সবার জন্য উপায় আছে। প্রয়োজন শুধু কাজ শিখা। স্কিল অর্জন করা। স্কিল অর্জন করতে না পারলে, আপনি অনলাইনে কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন না। ফ্রিল্যান্সিং বলেন আর ইউটিবিং যাই বলেন না কেন ইনকাম করার জন্য স্কিল ডেভেলাপমেন্ট মাস্ট।
আমাদের আজকের পোস্ট আমরা অনলাইনে কাজ করে ইনকাম করার যে উপায়গুলোর কথা বললাম সেগুলোর একটি স্কিলও যদি কাজে লাগাতে পারেন তাহলে, ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন তাতে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। আজকের পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
2 thoughts on “অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার বিশ্বস্ত ৭টি সাইট”